দেবলীনা ব্যানার্জী, রায়গঞ্জ : গ্রামের মানুষকে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা পাইয়ে দিতে ও সেই প্রকল্পগুলি সম্পর্কে সচেতন করতে গ্রাম সংযোগে প্রশাসনের পর এবার সরকারি প্রকল্পের সুবিধা গ্রামের মানুষ পাচ্ছেন কিনা অথবা তা নিয়ে কোনও সমস্যা, অভাব, অভিযোগ আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের নয়া উদ্যোগ “গ্রামে চলো”।
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ে জন অভিযোগ কেন্দ্র চালু হওয়ার পর জেলায় জেলায় প্রতিদিনই অনেক অভিযোগ জমা পড়ছে। বেশিরভাগ অভিযোগেই দেখা যাচ্ছে সরকারি নানা প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। এরপরই রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের অনুপ্রেরনায় উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসন গ্রামের মানুষের সমস্যা ও অভাব অভিযোগ শোনার জন্য এবং সমাধানের লক্ষ্যে সপ্তাহে একদিন করে “গ্রামে চলো ” কর্মসূচি গ্রহন করেছে।
এই সপ্তাহের শুরুতেই উত্তর দিনাজপুর জেলায় আপাতত উপনির্বাচনের জন্য কালিয়াগঞ্জ ব্লক বাদে বাকি আটটি ব্লকের সবক’টি গ্রামপঞ্চায়েত অফিসেই “গ্রাম চলো” অভিযানে সামিল হলেন প্রশাসনিক আধিকারিকেরা। রায়গঞ্জ ব্লকের কমলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের কমলাবাড়ি গ্রামে হাজির হন উত্তর দিনাজপুর জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা সহ অন্যান্য আধিকারিকেরা।
গ্রামের বাসিন্দাদের কাছ থেকে নানান সমস্যা, অভাব, অভিযোগের কথা শুনে তৎক্ষণাৎ তার সমাধানের ব্যবস্থাও করেন এদিন তাঁরা। কয়েকটি প্রাথমিক স্কুল ও আই সি ডি এস সেন্টারে মিড ডে মিল ও রেজিস্টারে অসংগতি দেখে শো কজ করেন জেলাশাসক। একই দিনে অতিরিক্ত জেলাশাসক, মহকুমা শাসক, ডেপুটি ম্যাজিসেট্রট ও বিডিও সহ জেলা ও মহকুমা স্তরের সকল প্রশাসনিক আধিকারিকেরা জেলার অন্যান্য গ্রাম পঞ্চায়েত গুলিতেও এই কর্মসূচি গ্রহণ করেন।
সাধারণ মানুষের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের এই উদ্যোগ নিঃসন্দেহে রাজ্য তথা দেশের কাছে দৃষ্টান্ত স্থাপন করবে।এর ফলে গ্রামবাসীদের সুবিধা, অসুবিধা ও অভিযোগের দ্রুত সুরাহা মেলার পাশাপাশি গ্রামে বসেই মানুষ তাদের সমস্যার সমাধান পেয়ে যাচ্ছেন।জেলা মহকুমা ও ব্লক স্তরের আধিকারিকদের হাতের কাছে পেয়ে তাদের মাধ্যমেই সমস্যা সমাধানের উপায় পেয়ে গেলে আগামীদিনে এই ধরনের সমস্যা ও অভিযোগের সংখ্যা কমবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
এর ফলে প্রশাসনের কাজ আরও গতিশীল হবে। উত্তর দিনাজপুর জেলাশাসক অরবিন্দ কুমার মীনা এ প্রসঙ্গে জানান, “আমরা আগেও নানান অভিযোগ পেয়ে তা সমাধানের ব্যবস্থা করতাম। কিন্তু গ্রামে চলোর মাধ্যমে সরাসরি গ্রামের মানুষের সাথে কথা বলে সমস্যার সমাধান করা যাবে। যে সকল সমস্যা জেলাস্তরে সমাধান সম্ভব হবে না, সে বিষয়ে রাজ্যের দৃষ্টি আকর্ষণ করে রিপোর্ট পাঠানো হবে।”